করোনা ভাইরাস এর লক্ষন ও প্রতিকার
কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস এর লক্ষণ কী?
আক্রান্ত ব্যক্তির সাধারণত জ্বর, ক্লান্তি এবং শুকনো কাশি দেখা দেয়। কারো কারো ক্ষেত্রে গায়ে ব্যথা, নাক বন্ধ, নাক দিয়ে পানি পড়া, গলা ব্যথা বা ডায়রিয়াও হতে পারে। এসব লক্ষণ শুরুতে খুব হালকা মাত্রায় দেখা যেতে পারে যা পরে ধীরে ধীরে বাড়তে পারে। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে কোনো লক্ষণ নাও দেখা যেতে পারে।
করোনা ভাইরাস কীভাবে ছড়ায়?
আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির সাথে বেরিয়ে আসা ভাইরাস সমৃদ্ধ বাষ্পকণা ( ড্রপলেট ) কোনো সুস্থ ব্যক্তির নিঃশ্বাসের সাথে তার শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এছাড়া, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশির পর তার আশপাশের জিনিসপত্রের উপরিভাগে ভাইরাস সম্বলিত এই অনুকণা পড়ে থাকতে পারে যা কোনো সুস্থ ব্যক্তি খালি হাতে স্পর্শ করলে তার হাতে লেগে যায়। পরে, যখন তিনি সেই হাত দিয়ে তার নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করেন তখন ভাইরাসটি তার শরীরে প্রবেশ করে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমন থেকে নিরাপদ থাকার উপায়
- সাবান ও পানি দিয়ে ঘন ঘন ও খুব ভালোভাবে হাতের উভয় পাশ কবজি পর্যন্ত ধোয়া।
- সাবান ও পানি ব্যবহারের সুযোগ না থাকলে হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে ভালো মানের স্যানিটাইজার ব্যবহার করা।
- হাত না ধুয়ে খালি হাতে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ না করা। আবশ্যিক না হলে নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা।
- অন্য কেউ হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় যিনি হাঁচি বা কাশি দিচ্ছেন তার থেকে কমপক্ষে তিন ফুট দূরে থাকা।
- নিজে হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় টিস্যু দিয়ে বা কনুই ভাঁজ করে নাকমুখ ঢাকা এবং ব্যবহৃত টিস্যুটি তাৎক্ষনিকভাবে ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলা।
- শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় হ্যান্ডশেক বা আলিঙ্গন করা থেকে বিরত থাকা।
- বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত গণপরিবহন ব্যবহার ও গণসমাগমস্থলে গমণ সীমিত রাখা
- অসুস্থতা বোধ করলে বাড়িতে অবস্থান করা। জ্বর ও কাশির সাথে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।
প্রতিকারঃ ঔষধ বা প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় এর কোন সরাসরি চিকিৎসা নেই। তবে আক্রন্ত হয়ে গেলে ?-
- নিজেকে এক ঘরে করে রাখতে হবে নিজ দায়িত্বে
- পাশাপাশি স্থির অবিচল থাকতে হবে (মনের সাহসই মানুষকে ৮০% সুস্থ্য রাখে )
- সাধারন জ্বর সর্দির চিকিৎসা নিতে হবে যেমন জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল খাওয়া,
- ঠান্ডা পানির পরিবর্তে গরম পানি(সহনীয় তাপে) সব সময় খাওয়া (লবন ও আদা দেয়া যেতে পারে)
- সাভাবিক খাওয়া দাওয়া করা
- বিশ্রাম ও সম্ভভ হলে ব্যায়াম করা
- খাবার বাসন আলাদা রাখা
- পোশাক আসাক পারলে নিজে নিজে ডিটার্জেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলা
- নিজের ঘর ডিটার্জেন্ট বা ব্লিচিং এর পানি দিয়ে ধৌত করা
- একটু পরপর হাত স্যানিটাইযার বা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা
- মোবাইল বা ইলেকট্রিক ডিভাইস স্যানিটাইযার দিয়ে মুছতে হবে
- হাচি কাশির সময় বড় রুমাল, তোয়ালে ব্যাবহার করা
- রুমাল, তোয়ালে, ব্যাবহার্যের জিনিসপত্র ডিটার্জেন্ট বা ব্লিচিং এর পানি দিয়ে ধৌত করা
- ১৪-দিন এভাবে সংগ্রাম করতে পারলে বুঝতে হবে আক্রান্তের শরীলে করোনাকে প্রতিরোধ করার মত এন্টিবডি তৈরি হয়ে গেছে। পুরপুরি সুস্থ হল কিনা তা নিশ্চিত হতে আরেকবার কোভিড-১৯ টেস্ট করা।
আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে কি?
অ্যান্টিবায়োটিক কেবল ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনে কাজ করে, ভাইরাস প্রতিরোধে নয়। কোভিড-১৯ যেহেতু ভাইরাস থেকে ছড়ায়, তাই এই ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক কোনো কাজ করে না।
সঠিক নিয়মে মাস্ক ব্যবহার
- ভাইরাসের সংক্রমন রোধে আক্রান্ত ব্যক্তির অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করা উচিত।
- সুস্থ ব্যক্তির জন্য মাস্ক ব্যবহার আবশ্যিক নয়।
- মাস্ক ধরার আগে অবশ্যই দুই হাত সাবান দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে।
- ছিদ্রযুক্ত মাস্ক ব্যবহার করা যাবে না।
- মাস্ক যেনো মুখ এবং থুঁতনি ভালোভাবে ঢেকে রাখে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- একটি মাস্ক একবারের বেশি ব্যবহার করা যাবে না
- ব্যবহৃত মাস্ক ঢাকনাযুক্ত ময়লার ঝুড়িতে ফেলতে হবে।
- মাস্ক খোলার পর সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
আরো পড়তে পারেনঃ সার্স ও করোনা ভাইরাস বিজ্ঞানী যে সহজ সমাধান দিলেন
640 total views, 3 today